নওগাঁর আত্রাইয়ে বন্যার পানি কমতে শুরু করায় বেড়েছে অসহায় মানুষের দুর্ভোগ গত এক সপ্তাহ থেকে অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদীর পানি হঠাৎই বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায়।সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা বন্যা প্রার্দুভাবে আত্রাই উপজেলার ৮ ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ায়।ঘরবাড়ির মধ্যে বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায়,দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট।বাড়ছে নানা রকম অসুখ বিসুখ সহ পানি বাহিত রোগ।বর্তমানে অসহায় ও বিপর্যস্থ এলাকার বাসিন্দারা, সাথে বেড়েছে গো-খাদ্যের।
উপজেলার ৮ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পার করেছে বিপদ মূহুর্ত । ভেসে গেছে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছের পুকুরসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাটের।
এবারের বন্যা মৌসুমের শুরুতে বন্যার পানিতে তছনছ হয়ে যায় মানুষের জীবন যাত্রা। সম্প্রতি ওই বন্যার পানি কমে যাওয়ায় পানিবন্দি মানুষ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আবারও দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা বন্যার পানিতে ডুবতে শুরু করেছেন তারা। এদিকে কয়েকদিন থেকে অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়ি বাঁধের কয়েকটি ভাঙন দিয়ে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে বিলাঞ্চলে।
বিশেষ করে উপজেলার হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের ফকিরনি নদী ও আত্রাই নদীর জাতআমরুল নামক স্থানের ভাঙন দিয়ে পানি ঢুকে প্রায় শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকের বসতবাড়ি বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় তারা ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন শিবিরে স্কুল কলেজ ও উঁচু এবং নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের উদনপৈয়, মিরাপুর, ফুলবাড়ি, পূর্বমিরাপুর, রসুলপুর, জাতোপাড়া, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের দমদমা,আমরুল কসবা, সিংসাড়া,কাশ্যবপাড়া। কালিকাপুর ইউনিয়নের রাইপুর, আটগ্রাম, দুর্গাপুর, ‘মদনডাঙ্গা, শলিয়া, হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের বান্দাইখাড়া, সন্যাসবাড়ি, হাটুরিয়া, দ্বীপচাঁদপুর, পাহাড়পুর, চকশিমলা, হাটকালুপাড়া, নন্দোনালি, কচুয়া, উত্তর বিল, উপজেলার গুড়নই, মালিপুকুরসহ অর্ধশত গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এদিকে বন্যাকবলিত মানুষদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে আত্রাই উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ছানাউল ইসলাম উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রামে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। তিনি বলেন,উপজেলার হাটকালুপাড়া ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়ন সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বন্যার্ত কোন মানুষ যেন অণাহারে বা অর্ধাহারে না থাকে। সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বন্যার্তদের সর্বাত্নক সহযোগিতা করছি। প্রয়োজনের আরও সহযোগিতা করা হবে। সেই সাথে স্থায়ীভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আত্রাই উপজেলার বন্যার্ত বানভাসী মানুষের মাঝে যে পরিমান ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন অসহায় বানভাসী মানুষেরা।