ভালোবাসায় ভরা ছোট্ট একটি সুখের সংসারের স্বপ্ন দেখেন সব নর-নারীই। সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত নারীরাও এর ব্যতিক্রম নন। ঝকঝকে ক্যারিয়ারের পাশাপাশি ভালোবাসায় পূর্ণ সংসার চান তারাও। কিন্তু তাদের এই চাওয়াটা প্রায় সময়ও ব্যাটেবলে মেলে না। ফলাফল সংসারে ভাঙন। তাই বুঝি উচ্চপদস্থ পুরুষের তুলনায় উচ্চপদে থাকা নারীদের জীবনে সংসার ভেঙ্গে যাওয়া হার অনেক বেশি। জানুয়ারির শুরুতে আমেরিকান ইকোনমিক জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, পেশা জীবনে সফল হতে গেলে পুরুষদের তুলনায় নারীদের ব্যক্তিগত জীবনে বেশি মূল্য দিতে হয়।
বিয়ের আগেই টাইগার শ্রফের বোনের বিচ্ছেদ
কেবল বাংলাদেশের নারীদের নয়, বিশ্ব জুড়েই মোটামুটি একই চিত্র। আজকে আমরা সুইডেনের নারীদের কথা তুলে ধরবো।
সুইডেনে কোনো বেসরকারি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী (সিইও)পদে নিয়োগ পাওয়ার তিন বছরের মধ্যে বিবাহিত পুরুষদের তুলনায় নারীদের বিচ্ছেদের হার প্রায় দ্বিগুণ।
গত তিন দশকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মেয়র বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের আশঙ্কা দ্বিগুণ হয়ে যায়। অথচ পুরুষদের ক্ষেত্রে এ আশঙ্কা প্রায় শূন্য।
চিকিৎসক বা পুলিশের মত দায়িত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং পেশাতেও নারীদের পদন্নোতির পর সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদের আশঙ্কা একই হারে বাড়ে। গবেষণায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ দম্পতির সন্তান ছিল। বাবা-মার বিচ্ছেদের পর তারা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান থাকলে নারীদের জন্য বিষয়টা আরো অনেক বেশি চাপের হয়ে যায়।
সুইডেনের একটি অভিজাত আসবাবপত্র তৈরির কোম্পানির সিইও শার্লট লিজুং। বিবাহ বিচ্ছেদের সময় তার দুই সন্তান খুব ছোট ছিল। সন্তানের দায়িত্ব এবং বড় পদে কাজের চাপ তার সংসারে চিড় ধরাতে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে কেবল যে সন্তান নিয়েই সমস্যা হয় তেমন নয়। সম্পর্ক ভাঙনে আরো অনেক অনেক কারণই থাকতে পারে। লিজুং বলেন, ‘সংসারের লাগাম কার হাতে, কার আয় বেশি- এটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অনেক পুরুষ এটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও বাস্তবতা হচ্ছে বিষয়টা তাদের জন্য মেনে নেওয়া খুব কঠিন। নিচের চেয়ে স্ত্রী বেশি আয় করে এবং অফিসে বেশি ক্ষমতাধর- অনেক পুরুষেরই এটা অপছন্দ।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের লিঙ্গ সমতা ইনডেক্সে সুইডেন সবার উপরে। সন্তান জন্মের পর ছুটি, দিবাযত্ন কেন্দ্রে ভর্তুকি, শিথিল কাজের সময় ইত্যাদি কারণ এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তারপরও ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় সেখানে বিচ্ছেদের হার বেশি।
তবে নারীরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পর বিচ্ছেদের হার বেড়েছে বলে যে রিপোর্ট বেরিয়েছে সেটিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না সুইডিশ নারীরা। কেননা তারা মনে করছেন, একটি অসুস্থ সংসার জীবন বয়ে নিয়ে যাওয়ার চেয়ে বিচ্ছেদই তো ভালো।