রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা গীর্জায় আদিবাসি কিশোরীকে তিন দিন আটক রেখে ধর্ষণের মামলায় র্যাবের হাতে আটক ফাদার প্রদিপ গেগরীকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আগামী রোববার তার রিমান্ড চাওয়া হতে পারে। তবে ধর্ষণের মত একটি স্পর্শকাতর ঘটনা ধাঁপাচাঁপা দিতে লোক দেখানো শালিসের মাধ্যমে ধর্ষক ফাদার প্রদিপ গেগরীকে পালানোর সুযোগ করে দেওয়া ব্যাক্তিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে বহাল তবিওতে রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেস্টায় সহযোগীতা দন্ডনীয় অপরাধ তাই সেই অপরাধে কামেল মার্ডীর তারা শাস্তি চাই। তবে ধর্ষক ফাদারের সহযোগিতা করার মুল হোতা মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামেল মার্ডীর স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে বেশ সখতা রয়েছে। তাই তার বিচার হবে কিনা সে বিষয়ে শঙ্কা রয়েছে। এদিকে আটকৃত ধর্ষক ফাদারের সর্বচ্চ শাস্তির দাবি যেমন উঠেছে, তেমনি ধর্ষনের পরে ফাদারকে পালানোর সুযোগ করে দেয়া ও শালিসে নামে কিশোরীর পরিবারকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করার ভয় দেখানো ব্যাক্তিদের আইনের আওতাই এনে বিচারের দাবি উঠেছে মিশনপাড়াসহ সর্ব মহলে।
চলতি বছরের ১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাজশাহী সাহেব বাজার জ্বিরো পয়েন্টে আদিবাসি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে চলা মানববন্ধন থেকে ধর্ষক ফাদারকে নানা ভাবে সহযোগিতা করা তানোর উপজেলা পারগানা পরিষদের সভাপতি ও মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মি; কামেল মার্ডীকে আইনের আওতায় এনে বিচার করার জোরালো দাবি উঠেছে।দ্রততম সময়ের মধ্যে তাকে আইনের আওতাই আনতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আদিবাসি ছাত্র পরিষদের নেতারা। আন্দোলন জোরালো করতে আদিবাসি ছাত্র পরিষদের ব্যানারে মুন্ডুমালা বাজারে কয়েক দিনের মধ্যে তারা একটি বিশাল মানববন্ধন করার পরিকল্পনা করেছেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ফাদার প্রদিপ গেগরীর কাছে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি ধাপাচাপা দিতে নানা কৌশল নিয়ে ছিলেন কামেল মার্ডী। তিনি কৌশলে ধর্ষক ফাদারে মুন্ডুমালা মিশন থেকে পালানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। তবে, অভিযুক্ত কামেল মার্ডী সম্প্রতি সংবাদ কর্মীদের কাছে স্বীকার করেছেন, শুধুমাত্র কিশোরীর ভব্যিষদের কথা চিন্তা করে তিনি এমন শালিসের আয়োজন করেছিলেন।এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, আটককৃত ফাদার প্রদিপ গেগরী কারাগারে রয়েছেন। আদালতে তার রিমান্ড চাওয়ার বিষয়টি প্রক্রিধীন রয়েছে। আর ফাদারকে সহযোগিতার করা ব্যাক্তিদের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিন্ধান্ত নিবেন।
উল্লেখ্য, তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা মাহালীপাড়া এলাকার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জার ফাদার প্রদীপ। এলাকার আদিবাসী খ্রিস্ট্রান সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী গত শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশে ওই গির্জায় ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই। এরপর সোমবার দুপুরের পর জানা যায়, নিখোঁজ কিশোরী গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।এরপর দুপুরেই গির্জার ভেতরেই শালিসি বৈঠক বসে কিশোরীর পরিবারকে ধর্মে ভয় দেখিয়ে ফাদারকে পালানোর সুযোগ করে দেন মুল হোতা আদিবাসি নেতা ও মুন্ডুমালা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামেল মার্ডী বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।